G A S O N L I N E

Since 2003

GOPSAI MENU

×
Home Discover Institutions Contact Us
Apply online ₹ Online Fees Payment
ভারতের স্বাধীনতা দিবস

ভূমিকা : স্বাধীনতা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট, আমরা আমাদের স্বাধীনতার মহান দিনটি উদযাপন করি। ১৯৪৭ সালের এই দিনে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছিল। এই দিনটি শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক দিন নয়, এটি আমাদের জাতীয় গর্ব এবং স্বাভিমানকে উদযাপনের একটি সুযোগ। স্বাধীনতা দিবসে আমরা আমাদের দেশপ্রেম, ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করি এবং সেইসব মহান নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যাঁদের অসামান্য অবদানের ফলে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। আজকের এই দিনে, আমরা আমাদের দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য নতুন করে শপথ গ্রহণ করি এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাই।

ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস অনেক দীর্ঘ ও সংগ্রামী। কয়েক শতাব্দী ধরে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়রা একযোগে সংগ্রাম করেছে। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট সেই সংগ্রামের ফলস্বরূপ ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। এখানে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরা হলো:

পটভূমিভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমন এবং তাদের ধীরে ধীরে পুরো দেশকে দখল করা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ বা প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম বড় সংগ্রাম, যদিও এটি সফল হয়নি।

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:

  • ১৮৮৫: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা। এটি স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করে।
  • ১৯০৫: বঙ্গভঙ্গ। ব্রিটিশ সরকার বাংলাকে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যা ব্যাপক বিরোধিতা ও আন্দোলনের সৃষ্টি করে।
  • ১৯১৯: জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। ব্রিটিশ সেনাবাহিনী অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলি চালায়, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ঘৃণার জন্ম দেয়।
  • ১৯২০-১৯৪২: মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন, ডান্ডি মার্চ, ও ভারত ছাড়ো আন্দোলন। গান্ধীর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ব্রিটিশদের উপর প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে।
  • ১৯৩০: সল্ট মার্চ (ডান্ডি অভিযান)। গান্ধীজী ও তার অনুসারীরা লবণের উপর ব্রিটিশ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সমুদ্র তীরবর্তী ডান্ডি পর্যন্ত হাঁটেন।
  • ১৯৪২: ভারত ছাড়ো আন্দোলন। গান্ধীজী ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
  • ১৯৪৭: ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হয় এবং জওহরলাল নেহেরু প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। দেশ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা

স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতের মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অপরিসীম এবং তাঁদের ত্যাগ ও সাহসের ফলস্বরূপই ভারত স্বাধীনতা লাভ করতে পেরেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো:

             নেতৃত্ব প্রেরণা:

    • মহাত্মা গান্ধী: অহিংস ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, যা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের গণআন্দোলনের সৃষ্টি করে।
    • সুভাষ চন্দ্র বসু: আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের চেষ্টা করেন।
    • ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরু: ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করেন এবং তাঁদের সাহস ও ত্যাগ দেশের যুবকদের অনুপ্রাণিত করে।
  1. আন্দোলন প্রতিবাদ:
    • নানা সাহেব, লক্ষ্মী বাঈ: ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম বড় ধরনের সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন।
    • অরবিন্দ ঘোষ, বাল গঙ্গাধর তিলক: স্বরাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করেন এবং মানুষকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেন।
  2. সাংগঠনিক ভূমিকা:
    • ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস: একটি সংগঠিত রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে স্বাধীনতার দাবি জোরালো করে এবং বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়।
    • মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলে।
  3. সংস্কৃতি সাহিত্য:
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: তাঁর সাহিত্য ও কবিতার মাধ্যমে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলেন এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: তাঁর উপন্যাস "আনন্দমঠ" ও গান "বন্দে মাতরম" ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রেরণা জোগায়।
  4. আন্তর্জাতিক সমর্থন যোগাযোগ:
    • সুভাষ চন্দ্র বসু: আজাদ হিন্দ ফৌজের মাধ্যমে জাপান ও জার্মানির সাহায্য নিয়ে ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেন।
    • জওহরলাল নেহেরু: আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করেন এবং সমর্থন আদায় করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ:

মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ছিল অসীম। তাঁরা নিজেদের জীবন, সম্পদ ও পরিবার ত্যাগ করে দেশের জন্য লড়াই করেছেন। তাঁদের ত্যাগ ও সংগ্রামের ফলস্বরূপ আজ আমরা স্বাধীন ও স্বাধীনতার পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে পারছি।

মুক্তিযোদ্ধাদের এই আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম দেশের মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম ও গর্বের অনুভূতি সৃষ্টি করে। তাঁদের প্রতি আমাদের চিরকালের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত, কারণ তাঁদেরই ত্যাগের জন্য আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক।

স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য:

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের পর বহু বীর ও বীরাঙ্গনার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের ফলস্বরূপ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়। এই দিনটি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান ও কার্যক্রমের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন:

  • লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলন: প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর দিল্লির লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।
  • প্যারেড সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্যারেড ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
  • প্রভাত ফেরি: এই দিনে অনেক মানুষ প্রভাত ফেরি করে, যা একটি শোভাযাত্রা হিসেবে পরিচিত। এতে মানুষ দেশাত্মবোধক গান গেয়ে অংশগ্রহণ করে।
  • আলোকসজ্জা আতশবাজি: রাতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভবন আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয় এবং আতশবাজি প্রদর্শন করা হয়।

স্বাধীনতার পরিণাম:

স্বাধীনতার পর ভারত একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা বিপ্লবীদের স্মরণে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়।

ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস শুধু একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জনের গল্প নয়, এটি একটি জাতির অবিচল সংকল্প, ত্যাগ ও সাহসের প্রমাণ।

দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে স্বাধীনতা রক্ষা তার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ভূমিকা :

স্বাধীনতা রক্ষা ও তার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে। শুধুমাত্র সরকারের উপর নির্ভর না করে ব্যক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে।

. শিক্ষার গুরুত্ব:

  • মানসম্মত শিক্ষা: সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা মানুষের মধ্যে সচেতনতা, দক্ষতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলে।
  • ইতিহাস সংস্কৃতি: দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সঠিক ধারণা প্রদান করতে হবে। এতে তারা স্বাধীনতার গুরুত্ব ও ত্যাগ সম্পর্কে সচেতন হবে।

. গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখা:

  • সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা: দেশের সংবিধান ও আইন মেনে চলতে হবে। সংবিধান গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।
  • স্বচ্ছ নির্বাচন: ভোটাধিকার ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে যাতে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করা যায়।
  • মতপ্রকাশের স্বাধীনতা: মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে।

. সামাজিক সমতা ন্যায় বিচার:

  • জাতিগত ধর্মীয় সমতা: সকল ধর্ম ও জাতির মানুষকে সমানভাবে মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করতে হবে।
  • নারী শিশু অধিকার: নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা ও তাদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে।
  • দারিদ্র্য বিমোচন: দারিদ্র্য দূর করে অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

. পরিবেশ সংরক্ষণ:

  • পরিবেশের সুরক্ষা: পরিবেশের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ: প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করতে হবে সংযতভাবে এবং পুনর্ব্যবহার ও পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হবে।

. অর্থনৈতিক উন্নয়ন:

  • উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক উদ্যোগ: উদ্যোক্তা ও নতুন ব্যবসার উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে হবে যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।
  • কর্মসংস্থান: মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

. নাগরিক সচেতনতা দায়িত্ব:

  • দেশপ্রেম সচেতনতা: দেশের প্রতি ভালবাসা ও সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে হবে।
  • সামাজিক সেবা: সামাজিক সেবায় অংশগ্রহণ করে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।

. সন্ত্রাস দুর্নীতি রোধ:

  • সন্ত্রাস দমন: সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • দুর্নীতি দমন: দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

. বৈশ্বিক সংযোগ সহযোগিতা:

  • আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
  • শান্তি প্রচার: বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকতে হবে।

 উপসংহার :

স্বাধীনতা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, স্বাধীনতা এক দিনের অর্জন নয়, বরং এটি বহু বছরের সংগ্রামের ফল। এই দিনটি আমাদের অতীতের গৌরবময় ইতিহাস এবং আমাদের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী সকল বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার সুযোগ। স্বাধীনতা দিবসে আমরা শুধু আমাদের অর্জনকে উদযাপন করি না, বরং আমরা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যকে পুনরায় মনে করি।

আজকের দিনে আমরা আমাদের দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার শপথ গ্রহণ করি। স্বাধীনতার প্রকৃত মানে হলো আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করবো, জাতির উন্নতি এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা এমন একটি দেশ উপহার দেবো যেখানে তারা শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সম্মানের সাথে জীবনযাপন করতে পারবে। স্বাধীনতা দিবস আমাদের নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলার প্রেরণা দেয় এবং আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একটি স্বাধীন এবং স্বাবলম্বী জাতি।

 

বর্ষা ভট্টাচার্য্য, 

সহ অধ্যাপিকা, বেঙ্গল কলেজ অফ টিচার এডুকেশন

Related Post

blog
World Energy Conservation Day A Global Call to Action ...

Today on December 14th, the world observes World Energy Conservation Day, a day to remind the world that energy conservation is not just about reducing costs, but also about safeguarding the planet for future generations.  In a world being increasingly threatened by environmental challenges, World Energy Conservation Day emphasises the importance of responsible energy consumption and urges individuals, businesses, and governments to take action toward a more sustainable future.

blog
HUMAN RIGHTS DAY ...

The fight for human rights is urgent. The time to act is now.

Leave a Comment